১৮ মে ২০২৪, ০১:৩৮ অপরাহ্ন, ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, শনিবার, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স : রংপুরের পীরগাছায় ইমাম নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে একটি ঈদগাহে নামাজ পড়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে উপজেলা প্রশাসন। কয়েকটি সালিস বৈঠকেও দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ইটাকুমারী, ইটাকুমারী পূর্বপাড়া, শাহপাড়া, আমতলী, জগদীশ, পঞ্চাননসহ প্রায় ১০টি গ্রামের মুসল্লিদের নামাজের জন্য ৬টি মসজিদ রয়েছে। তবে ওই গ্রামগুলোর মুসল্লিরা একত্রে দীর্ঘদিন ধরে দুই ঈদের নামাজ ইটাকুমারী পূর্বপাড়া ঈদগাহ মাঠে আদায় করে আসছে।
পাঁচ বছর আগে জগদীশ আমতলী মসজিদের ইমাম মাওলানা শহিদুল ইসলামকে ওই ঈদগাহ মাঠের ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই ইমামের ইমামতি করাকে কেন্দ্র করে তিন বছর আগে মুসল্লিরা দুই ভাগ হয়ে পড়ে। এক পক্ষ ওই ইমামের পরিবর্তন চান। আরেক পক্ষ ওই ইমামকে বহাল রাখতে চান।
এ নিয়ে বহুবার সালিস বৈঠকের পর গত বছর স্থানীয় ইটাকুমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার দুই পক্ষের জন্য ওই মাঠেই পৃথক দুটি জামাতের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু সময় কম-বেশিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এবার আসন্ন ঈদুল ফিতরের নামাজকে কেন্দ্র করে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে এবার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত গড়ায়। উপজেলা প্রশাসন শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে দুই পক্ষকে নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি। গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার আবারও বৈঠকে বসে সমাধান না হওয়ায় ওই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
স্থানীয় মুসল্লি মাইদুল ইসলাম, সৈয়দ আলী, কালু মিয়া বলেন, প্রায় ৫৫ বছর আগের এই ঈদগাহ মাঠ নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা বিরাট আকার ধারণ করেছে। ফলে সাধারণ মুসল্লিরা বেশ বিপাকে পড়েছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আলাদা আলাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা মাঠে নামাজ আদায় করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। ইটাকুমারী ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আবুল বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে সমাধানে আসার চেষ্টা করছি। কিন্তু কেউ রাজি হচ্ছেন না।’
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা চাই উভয় পক্ষই বসে সমঝোতা করে নামাজ আদায় করুক।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে মতানৈক্য থাকায় উভয় পক্ষকে একটা সিদ্ধান্তে আসার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে একটি পক্ষ স্কুল মাঠে নামাজ আদায়ের আবেদন করেছে। ঈদগাহ বাদে অন্য জায়গায় নামাজ পড়াতে সমস্যা নেই। দুই পক্ষ ঐকমত্যে না পৌঁছাতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত বন্ধ থাকবে।